বলের পরিমাণ ও নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - এসো বলকে জানি | | NCTB BOOK

আমরা নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে জেনেছি যে বস্তুর গতির অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে অর্থাৎ স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে হলে বা গতিশীল বস্তুর গতির পরিবর্তন করতে হলে বল প্রয়োগ করতে হবে। বস্তুর জড়তা থাকার কারণে এ বল প্রয়োগ করতে হয়। যে বস্তুর জড়তা যত বেশি, তার অবস্থা পরিবর্তনের জন্য তত বেশি বল দিতে হবে। জড়তার পরিমাণ হচ্ছে ভর, সুতরাং যে বস্তুর ভর যত বেশি হবে, গতির পরিবর্তন করতে হলে সেই বস্তুর উপর তত বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট ভরের বস্তুর উপর কতখানি বল প্রয়োগ করা হলে বস্তুটির বেগের কতখানি পরিবর্তন হবে, নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র সেটি ব্যাখ্যা করেছে। তবে নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রটি জানার আগে আমাদের দুটো রাশির কথা জানতে হবে। একটি হচ্ছে ভরবেগ অন্যটি ত্বরণ।


ভরবেগ: ভরবেগ হচ্ছে ভর এবং বেগের গুণফল। অর্থাৎ কোনো বস্তুর ভর m এবং বেগ v হলে ভরবেগ p হচ্ছে : p = mv যদি ভরের পরিবর্তন না হয়, তাহলে ভরবেগের পরিবর্তন হচ্ছে বেগের পরিবর্তনের সাথে ভরের গুণফল। অর্থাৎ m ভরের কোনো বস্তুর বেগ u থেকে বেড়ে v হলে তার ভরবেগের পরিবর্তন m(vu)।


ত্বরণ: ত্বরণ হচ্ছে বেগের পরিবর্তনের হার। অর্থাৎ কোনো বস্তুর বেগ যদি t সময়ে u থেকে পরিবর্তিত হয়ে v হয়, তাহলে তার ত্বরণ a হচ্ছে : a = (v-u)/t আমরা যদি ভরবেগ এবং ত্বরণ বুঝে থাকি তাহলে নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রটি বোঝা খুবই সহজ। নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রটি হলো, বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক। তবে বলকে এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যে আমরা সমানুপাতিক না বলে “সমান” বলতে পারি। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি, কোনো বস্তুর ভরবেগ সমরে mu থেকে পরিবর্তিত হয়ে my হলে তার ভরবেগের পরিবর্তনের হার ma = m(v-u)/t প্রযুক্ত বল F-এর সমান হবে। অর্থাৎ,  F=(m(v-u) t = ma   বলের একক নিউটন। যে পরিমাণ বল এক কিলোগ্রাম ভরের কোনো বস্তুর ওপর প্রযুক্ত হয়ে এক মিটার/সেকেন্ড ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে এক নিউটন (N) বলে।


 উদাহরণ
একটি বস্তুর ভর ২০ কেজি। এর ওপর একটি বল প্রযুক্ত হওয়ায় এর ত্বরণ হলো ২ মি./সে। প্রযুক্ত বলের মান কত ছিল?
সমাধান: এখানে, বস্তর ভর, m =২০ কেজি স্বরণ, a = ২ মি/সে বা, F = ?

আমরা জানি, F = ma
= ২০ কেজি :  * ২ মি/সে
= ৪০ নিউটন
উত্তর: ৪০ নিউটন


 

Content added By
Promotion